Monday, November 5, 2018

The Story of Three Chairs (Bengali)

প্রায় পাঁচ বছর আগেকার কথা 


আমি তখন ইসরাইল গেছিলাম। ইহুদি লোকেরা খুব অকপট হয়ে ইটা আমি আগে থেকেই জানতাম।  ২০০৫ থেকে ওদের সাথে কাজ করে করে অনেকটা ওদের সংকৃতি আর ব্যবহার গুলো রপ্ত করে নিয়েছিলাম।  তবে কোনো কোনে আমার মধ্যে মদ্ধবিত্ত ভারতীয় বাসা করে বসেছিল।  তার ওপর পরিবারের দেওয়া সংস্কার মন আর আত্মার মধ্যে কেমন সার্কাস খেলা করছিলো।  একটা মিটিং এ ডেকেছিল আর আমি আর আমার কয়েকটা সহকর্মীরা আগে পৌঁছে যাই.। মিটিং এর যে ঘর ছিল ওখানে কয়েকটা চেয়ার খালি ছিল।  তবে আমরা সবাই আসার প্রতীক্ষা করতে থাকি।  সবাই আসে আর নিজের নিজের জায়গায় বসে যায়।  এমন ও ঘটে কি আমাদের অনেকের সঠিক জায়গায় স্থান না পেয়ে পেছনে বসে থাকি।  

মিটিং শেষ হয়ে যাওয়ার পরে আমার এক ইহুদি বন্ধু আমাকে কাছে ডেকে জিজ্ঞেস করে "তোমরা তো অনেক আগে এসেছিলে তালে পেছনে বসলে কেন "
আমি বললাম "না আমরা  ...... আসলে সবার জন্য প্রতীক্ষা করছিলাম তার বড় বসতাম"

আমার এই কথা শুনে ও হাসলো।  বুঝতে পারলাম না। তার পর হাসির ছলে বললো 
"My friend Listen to a Story"

গল্পটা যা আমি তা বাংলায় অনুবাদ করে দিচ্ছি 

এই গল্পটা হলো একটা খালি ঘর আর তিন খানা চেয়ার নিয়ে।  তবে এই চেয়ার কোনো যা তা চেয়ার নয় কিন্তু।  এর মধ্যে একটা হলো রাজার চেয়ার, একটা মন্ত্রীর আর একটা প্রজার।  ঘরটা খালি।  কেউ নেই।  

এর মধ্যে একজন সজ্জন পুরুষ ঘরে ঢুকে আসে। পরনে ভালো কাপড়, শিক্ষিত, দেখতে ভালো, মানে গোটা গোটা জেন্টলম্যান বলে মনে হয়ে। সে বসার জায়গা খুজ্জিল। দেখলো তিনটে চেয়ার।  ভাবলো রাজা আর মন্ত্রী তো আমি নোই তাই প্রজার চেয়ারটাতে ভালো করে বসে যাই।  বসে গেলো।  

এর পর একটা হেক্কাই চেহারার লোক, মুখে পান গোজা, বিডি খেতে খেতে ঘরে ঢোকে।  সেও জায়গা খুজ্জিল।  তবে দেখে কি দুটো জায়গা খালি।  মন্ত্রীর আর রাজার।  সে রাজার ছিঁড়ে বসতে তবুও একটু দ্বিধা পায় তাই মন্ত্রীর চেয়ার এ বসে যায়।  

এর পর আসে আরেক লোক, মদ খেয়ে চুর , পরনে ময়লা পোশাক, চান করে নি প্রায় এক সপ্তাহ হবে, গাঁজা টানতে টানতে ঘরে ঢোকে।  ঘরে ঢুকে দেখে , আরিব্বাস রাজার চেয়ার তো খালি।  কিছু না ভেবে সে রাজার চেয়ার এ বসে যায়।  

তার পর আমার বন্ধু আমায় জিজ্ঞেস করলে, "কি বুঝলে ? "
আমি ওর কথা আর গল্প দুটোই বুঝে গেছিলাম।  

অনেক সময় আমরা ভাগ্য কে দোষ দি আর জিজ্ঞেস করি, " আমরা কেন রাজা হতে পারিনি আর অপোগন্ড কয়েকটা লোকেরা কেন আমাদের উপর রাজত্ব করছে ?"

তার উত্তর হলো , আমাদের এই লজ্জা , এই ভয় যেটা সংস্কারের সিরিঞ্জে ঢুকিয়ে আমাদের এক একটা শিরায় উদ্বুদ্ধ করা হয়ে।  আমাদের ছোটবেলা থেকে সেখান হয় ভয় পেতে, সংযত থাকতে, বলতে পারেন আমাদের সংকৃতি নামে একটা কাপুরুষ বানানোর পাঠশালা তৈরি করে দেওয়া হয়ে।  সেই জন্য আমরা অনেক জায়গায় নিজেদের প্রকাশ করেও, নিজেদের গুন্ বুঝেও, রাজার চেয়ার এ  বসতে পারিনা।  কেন বসতে পারি না ? আমাদের সংস্কার, লজ্জা ইত্যাদী আমাদের আটকে দেয়।  আর দরজা খুলে দেয় যত সব উল্লুকদের জন্য যাদের ওই স্থানে বসার কোনো যোগ্যতা বা অধিকার নেই।  

তাই  

১. আপনার ভাবি প্রজন্ম কে নির্ভয় বানাবেন। পরীক্ষায় ভালো নম্বর না পেলেও চলে, সবচে বড়ো পরীক্ষা তো জীবন নেয় আর সে নেয় প্রতিদিন।  তালে নির্ভয় না হলে যে জীবনের পরীক্ষায় কখনো কেউ উত্তির্ণ হতে পারবে না।  

২. সন্মান করতে সেখান ভয় করতে না।  গুরুজনেরা সন্মান চায়, আর যে গুরুজন ভয় দেখতে ভালোবাসে সে তো গুরুজন নয়।  প্রকৃত গুরুজন সময়ের সাথে তাল দিয়ে চলে।  "না" শব্দটা খুব কম বলে।  বলে, চেষ্টা করো, যদি না পারো আমি তো আছি।  এই হলো গুরুজনের পরিচয়।  

৩. আপনি যদি গুরুজনের শ্রেণী তে আসেন তাহলে মনে রাখবেন সবচে ভালো প্রণাম হলো যখন আপনার ছোটজনেরা নাম করে।  আর সেই নাম করার জন্য "না" শব্দ অত্যন্ত একটা বড়ো আগড়।  "হ্যা" বলতে শিখুন।  নেতৃত্ব করুন মনিবি না।  

এইটা যদি সেখান তাহলেই দেখবেন সব রাজার চেয়ার এ সজ্জন আর ভালো লোক বসে আছে।  

ইতি 
কল্যাণ মুখার্জী 

Friday, November 2, 2018

To fir ho jaane do ...... (Let it be....)

Why think of results, why think of rumors when you are with me..... Let the moments pass by let us live the moment.

तो फिर हो जाने दो  ........ 

मुलाक़ात अगर इश्क़ में बदल जाए 
तो इसे ज़ाहिर हो जाने दो 
कशिश हो या हो छलावा , इसे 
मुकम्मल हो जाने दो   ...... 

होठो पे कॉफी की बूंदों को रहने दो 
इसे गिराओ मत इस तरह की हो जाये ये बर्बाद 
दाग लगते है तो फिर लग जाने दो 

पेशानी के आगे ज़ुल्फ़ों का थोड़ा अँधेरा हो 
तो बुरा क्या है ?
इन अंधेरो में छुपे राज़ को राज़ रहने दो   ...... 

ज़माना कहाँ आज तफ्सील लेती है हर बात का 
इसे आदत है बस फलसफे उड़ेलने का 
उन फलसफा में गर थोड़ी मेरी बदनामी हो 
तो मेरे नाम में बदनामी रहने दो    ....... 

यह पल फिर न मिलेंगे तुम्हारे साथ तो आज 
क्यों न इस पल को जी लू मैं ?
लोगो की बातें तो फिर भी होंगी 
आज उन बातों को रहने दो  ....... 

Tuesday, October 30, 2018

Mehroom (Reverse Sonet)

I have always wondered how would a reverse Sonet look like in Hindi. Had read that it is really difficult to compose one... Sestet (six lines) in the beginning and then the octet (eight lines of conclusions) as opposed to a conservative Sonet which has Octet followed by the Sestet.  This is a small try on a subject... Hope to do better as time goes on. 

Regards

 Kalyan

मेहरूम 

आग़ाज़ तो बुलंद थी पर कहीं तो कमी रही होगी 
इस तरह रुक्सत हुए हम तेरे जहाँ से 
इन्तहा में कुछ तो कमी होगी 
तारीख गिनना मुझे कहाँ आता है, माज़ी की मुनीम तो तुम थी 
फिर भी अच्छे लम्हे तुम भूल गए 
याददाश्त में कुछ तो कमी होगी  ...... 

दिल पे हाथ रख के कहना 
"मैंने कोशिश नहीं की !" हर पल हर सांस 
मेरी ज़िंदगी में कुछ अनकही बातें जो ज़बान पे नहीं आयी 
अल्फाज़ो से महरूम उन बातों को मैं कहना चाहता हूँ। 
पर कहीं आवाज़ की कमी होगी , जो रहे आवाज़ तो,
हमनवाज़ की कमी होगी पर यह सच है सुकून होगा,
अल्फाज़ो से महरूम उन बातों पे इश्क़ का जूनून होगा   ...... 

Saturday, October 27, 2018

Dar Lagta hai!!!!!!

मोहब्बत से परहेज़ नहीं मुझे 
दिल्लगी से डर  लगता है 
मौत तो एक दिन आनी है, सच है 
ज़िंदगी से डर लगता है 

प्यार अगर सच्चा है तो, ज़माने से क्यों छुपाते हो 
इश्क़ की तुम्हारी दास्ताँ बेढंग है 
या तुम्हे ज़माने से डर लगता है ?

नज़रफ़रेब हुस्न हो या पाक शबनम रूह 
उल्फत के इम्तहानों से पुरे जहाँ  को डर लगता है 

इश्क़ के फलसफे लिखे है दिल के हर सफो पे पर 
सुर्ख सयाही को उड़ेलने में सबको डर लगता है

खुश हूँ मैं आज खुदगर्ज़ बनके, 
उल्फत प्यार को बदनाम करके, 
डर का नाम नहीं हैं, 
हर पल पाना , हर पल खोना 
थोड़ा थोड़ा हर पल जीना 
अय्याशी  के घुट पीना 

क्या कहूँ...... अब डर को भी डर लगता है।  

Saturday, November 4, 2017

From the pages of the past (Part - XI) [Morning of Madhyamgram]

মধ্যমগ্রামের সকাল 




অনেক দিন এমন হয়ে কি আমি অনেক দেরি অভদি ঘুমিয়ে থাকি।  সকাল হয়ে যায় কিন্তু আমার ঘুম ভাঙে না।  কেমন যেন একটা ক্লান্তি থেকেই যায় আমার শরীরে আর সে ক্লান্তি যে আদোও শারীরিক কি না সেটা কোনো রকম ভাবে বোঝা যায় না।  এতো আরামদায়ক বিছানা থাকতেও কেন যে ঘুম পুরো হয়ে না সেটা আজ অবধি জানতে পারি নি।  ঘুম যখন সকাল বলে ভাঙে না আর যখন অলসের বাঁধ ভেঙে যায় আর মনে হয়ে আরও একটু ঘুমিয়ে নি যেন কি কাল আবার ঘুম আসবে না তখন বুঝতে হয় কি সমস্যা শারীরিক না মানসিক।  

কিন্তু এক সময় এমন ছিল কি দশটা বাজলেই ঘুম এসে যেত আর ছটা বাজলেই ঘুম ভেঙে যেত।  এমন ঠিকানা , যেখানে বেশি ঘুম না তবে ভালো ঘুম হতো।  আমাদের মধ্যমগ্রামের বাড়িতে।  গরমকাল হোক বা শীতকাল ঠিক ভোরবেলা ঘুম ভেঙে যেত তার বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।  

পাখির ডাক আর তার সাথে হালকা ঠান্ডা হাওয়া যেটা জানলা দিয়ে চুপি সাড়ে ঘরে ঢুকতো আর ঢোকা মাত্র আলতো আলতো করে মাথার উপর হাত বলাতো এই বলে কি "সকাল হয়ে গেছে অনেক ঘুম হলো এবার উঠে পর। " 

হওয়ার সাথে মিশে থাকতো উনুনের ধুয়ার গন্ধ।  সকাল বেলা উনুনে আঁচ দেয়া হচ্ছে অরে একটা অপ্ৰদূষিক ধুয়া আর মিষ্টি গন্ধ নাকে যেত।  পাশের বাড়িতে কোনো দিদি সকাল বেলা তানপুরা নিয়ে ভৈরবী রাগ সাধছে আর তার মিষ্টি সুর তার সাথে এই ধুয়ার গন্ধ মিলে একটা মন মাতানো আমেজের সৃষ্টি।  সেই আমেজ আরও উপভোগ করতো তারা যারা সেই সময় বারান্দায় দাড়িয়ে বা আরামকেদারায় বসে চা খেত।  সকাল বেলা এই গান, গন্ধ, চা আর আনন্দবাজার পত্রিকা নিয়ে শুরু হতো দিন।  

আমাদের বাড়ির নিচ দিয়ে একটা গেছো রোজ যেত খেজুরের রস নিয়ে।  অনেক সময় আমরাও ওই খেজুরের রস খেয়েছি।  সকাল সকাল খেতে খুব ভালো লাগে।  তখন কোনো FM রেডিও ছিল না তখন এইটাই ছিল আমাদের মর্নিং ব্লকবাস্টার আর এমন ব্লকবাস্টার যে নিত্য নুতন কাহিনী রোজ নিয়ে আসতো।  কখনো কখনো এই কাহিনীর মধ্যে কিছু অ্যাকশন হতো যেমন কি কাজের মাসির তক্কা-তক্কী আর কখনো সামনের টিউব-ওয়েল তে জল নিয়ে লড়াই।  

সব সকাল গুলোই একটা নুতন সকাল আর কোনো ভাবেই একঘেয়ে ছিল না।  

আজ কাল সে সব নেই।  সকাল বেলা হতেই এক রকমের নিত্যকর্ম একঘেয়ে জীবন।  বেশি ঘুম কিন্তু ভালো ঘুম না বা ভালো ঘুম ভাঙাও না।  
উঠে পড়তে না পড়তেই ফেসবুক দেখা কি কে আমাকে ভালোবাসে অরে কে আমাকে অগ্রাহ্য করে।  তার পর একটু টিভি দেখা আর সমাচারের নামে পরনিন্দা পরচর্চা।  
সকালে উঠে সমাচার পত্রে এই উদ্ঘোষণা পাওয়া কি এই পৃথিবীটা আর থাকার যোগ্য না।  চারি দিকে ত্রাহিমম আর ভ্রান্তির সৃষ্টি।  সবাই যেন দিশাহীন দৌড়োচ্ছে।  কখনো কখনো আঁতেল মার্কা কোনো 
esoteric বা দুর্বুদ্ধ ছবি বা লোকেদের থেকে রোগ হওয়ার ১০টি সহজ উপায় সোনা।  

সকাল এখন নির্মল না এখন সকাল হলো যুদ্ধের বুগেল।  

তাই এখনো মনে পরে মধ্যমগ্রামের সকাল। 


ইতি 

কল্যাণ 

From the pages of the past (Part X) [ Romance with Cricket and Bubble Gum]

বাবল গম , ক্রিকেট  আর তার সাথে আমাদের রোমান্স 





ছোটবেলা যখন ছিল আমরা কেউ সমৃদ্ধ ছিলাম না।  বাড়িতে সাদা কালো টিভি সকাল ৬টা থেকে সকাল ১১টা  অবধি জল আর সন্ধ্যে ৪টে  থেকে ৮টা  অবধি জল।  পাড়া পড়শী আর তাদের কথা বার্তা শুনে বোড়োদের দিন কেটে যেত।  আমাদের বাড়ির পাশে ছিল একটা মাঠ আর পুকুর।  এর উল্লেখ আমি আমার প্রথম লেখা তে করে ছিলাম।  তা যাই হোক।  আমরা সেই মাঠে খেলতাম।  

১৯৮৪ এনেছিল একটা তুমুল ঝড় যেটাকে আমরা বলি ক্রিকেট।  কে জানতো ভবিষ্যতে এই ক্রিকেট কোনোদিন আমাদের দেশের নুতন ইতিহাস লিখবে ! ১৯৮৩ তে আমরা যখন বিশ্বকাপ জিতি তার পরে পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়ে এই নুতন খেলার মন মাতানো পাগলামি।  ঘরে ঘরে বল অরে ব্যাট।  প্রতিটি ঘরে ছোট ছোট ছেলে, কেউ হতে চাই গাভাস্কার বা কেউ কপিল দেব।  

ফুটবল প্রিয় বাঙালি কিন্তু এর থেকে অছুত থাকে নি।  আমরা সবাই কিন্তু অনেক অনেক দিন ধরে এই খেলা তাকে ফলো করছিলাম কিন্তু ভালো ভাবে অনুসরণ করিনি।  বাঙালি বলে ফুটবল আর সেটাই ছিল আমাদের প্রধান পরিচয়।  বাঙালি যদি সন্ধ্যের আড্ডাতে ফুটবল নিয়ে আর রাজনীতি নিয়ে চর্চা না করে তালে সেই আড্ডা অসম্পূর্ণ আর লোকেদের রাতের খাওয়া হজম হয়ে না।  তবে ১৯৮৩ বিজয়ের পরে সেই চিন্তা ধারা বদলায়।  চায়ের দোকানের আড্ডায় একটা নুতন চর্চা, একটা নুতন খেলা নিয়ে, ক্রিকেট।  

ক্রিকেট খেলা হিসেবেই না কিন্তু বাণিজ্যিক ভাবে অনেক আকর্ষিত করেছিল লোকেদের।  বড়লোকদের খেলা এখন মধ্য-বিত্ত পরিবারের বসার ঘরে চলে এসেছিলো।  লোকেরা জানতে পারলো যে এই খেলা খেলার জন্য বড়োলোক হওয়া কোনো আজ্ঞাধীন শর্ত না।  লোকেরা এই খেলাটা নিজের মতো করেও খেলতে পারে, মাঠে, পুকুরের ধারে, ফাঁকা রাস্তায় আর এর মধ্যে নিজের হিসেবে অনেক পরিবর্তন পর্যন্ত করতে পারে।  

বাণিজ্যিক দিকে অনেক পণ্যদ্রব্য বাজারে ফেলা হলো।  এর মূল আধার ছিল ছোট ছেলেদের আকর্ষিত করা।  কেন না  বয়স্ক প্রজন্মকে ফুটবল থেকে সরানো খুব কঠিন আর ওদের বিচারধারা বদলানো একটা চ্যালেঞ্জ।  ছোট ছেলেদের মাথায় এইটা ভালো ভাবে লেখার জন্য ব্যবসায়ীরা নির্ভর করে বাবল গামের ওপর।  ৩০ পয়সা দামের এই দ্রব্য তার মধ্যে ওরা ঢুকিয়ে দিলো স্টিকার যেটা যত জমা করবে ওরা ওতো prize পাবে।  প্রতিটা স্টিকারে ছিল রান নাতো উইকেট।  রান জমা করতে হবে ১০০০ আর উইকেট জমা করতে হবে ৮ এই করলে prize পাবে।  

আমি আর তাপসদা এর মধ্যে অনেক ভাবে জড়িয়ে পড়েছিলাম।  বাবল গম  একটা যেমন নেশা হয়ে গেছিলো।  খাওয়ার জন্য না কিন্তু ওই স্টিকার গুলো জমা করার জন্য। আমি রোজ আমার মা কিংবা বাবাকে আবদার করতাম একটা বাবল গম কেনার জন্য আর ওই স্টিকার গুলো জমা করে রেখে দিতাম।  অঙ্ক কোষে দেখে রাখতাম কি কত রান বানানো হলো।  রবিবার হতো আমাদের হিসেবে নিকেশ অরে বন্ধুদের মধ্যে হতো এক রকমের আরেকটা ব্যবসা।  কারুর রান বেশি থাকলে আর উইকেট না থাকলে সে দশ রান দিয়ে একটা উইকেট অন্যদের থেকে কিনে নিতো।  যার রান কম সে এক উইকেট দিয়ে দশ রান কিংবা কোনো কোনো দিন ২০ রান পর্যন্ত কিনতে পারতো।  এই ছিল আমাদের দুর্দান্ত হিসেবে নিকসের কথা।  এক রকম রোমান্সে যাতে ছিল ক্রিকেট, বাবল গম আর আমরা।  

আজকাল যখন বাচ্চাদের দেখি যারা ভিডিও গেম নিয়ে মত্ত আর তারা ক্রিকেট খেলছে ভিডিও গেম নিয়ে তখন আপসোস হয়ে কি এরা কি ওই আনন্দ পাচ্ছে যেটা আমরা পেয়েছিলাম।  বোধ হয় না।  আমাদের অর্থাবাব ছিল কিন্তু আমরা নিজেদের সুখ শান্তি নিজেরা খুঁজে নিতাম।  

আজকাল কিন্তু সে সব হয়ে না।  আর তাই এই লেখা যাতে আজকের প্রজন্ম শুধু বাবার - লোধির ইতিহাস পড়েনা।  যদি ইতিহাস পড়তেই হয়ে তালে যাতে পড়ে ওদের বাবা, মা, কাকা , কাকিমার ইতিহাস।  


ইতি 

কল্যাণ 

Tuesday, October 31, 2017

From the pages of the past (Part IX) [ Discipline ------ and the Uniform]

অনুশাসন ও ইউনিফর্ম 



আমাদের ছোটবেলায় "অধিকার" শব্দটার মানে অনেকেই বুঝতো না।  আমরা জানতাম  খেলা,মজা, পড়া, বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদী।  কেননা আমরা আর আমাদের প্রজন্ম এই বাগদা বাগদা শব্দের দিকে উদ্ভাসিত ছিলাম না।  আমাদের সময় আমরা শিক্ষক কে শ্রদ্ধা করতাম আর কিছু অংশে ভয় ও পেতাম।  আমরা এই তথ্যটা ভালো ভাবে জানতাম কি যদি আমাদের বিরুদ্ধে শিক্ষক কোনো অভিযোগ করে তালে শিক্ষক আর আমাদের মাতাপিতা এক দলে থাকবেন।  

পর্ণশ্রীর কাছা-কাছী  আমার পাঠশালা ছিল।  যেটা বলতে পারেন একটা Pre-Primary School  যার নাম ছিল Sunny Preparatory School । আমি ওখানে তিন বছর কাটাই আর ওখানে তৈরী হয় আমার শৈশবের অনুশীলন।  অনুশাসন আমাদের জীবনে খুব দরকার।  আপসোস এটা আমরা বাল্যজীবনে বুঝতে পারি কিন্তু প্রাপ্ত বয়েসে আমাদের কেমন যেন একটা মানসিক দূষণ হয়ে যার ভিত্তি তে আমরা এই সব অনুশাসনিক পদ্ধতির জলাঞ্জলি দিয়ে দি বা একটা ঘুলঘুলি বের করে নি।  বড়ো হওয়াটা যে এই দেশে কত বড়ো অপরাধ তা আর কি বলবো।  তা থাকে এখন অনুশাসনে ফোকাস করা যাক।  

স্কুলে রেভা আন্টি আমাকে খুব পছন্দ করতেন।  অবশ্য আমার দুস্টুমি অগ্রাহ্য করতেন না।  তবে তিনি এমন এক জন টিচার যার কাছ থেকে আমি ওই স্কুলে স্ক্যালের বাড়ি খাই নি।  তাই আমার ভারী পছন্দ।  একদিন আমাকে কেউ বলেছিলো যে স্কুলে এই ইউনিফর্ম জাতীয় জিনিষটা একটা সাহেবি কায়দার নকল।  আমি অবশ্য তখন সাহেব, ফরাসি, জাপানি কিছুই বুঝতাম না কিন্তু বাবাদের আড্ডায় আড়ি পেতে এইটা শুনতে পেরেছি।  আর রীতিমতো এইটা বুঝতে পেরেছি কি বাবা আর তার বন্ধুরা খুব একটা উনিফর্মের সমর্থক না।  ব্যাস আমার ভেতরের বাঘা যতীন খেয়ে দিয়ে অনশনের জন্য প্রস্তুত। আমিও ভেবে নিলাম কি এই ইউনিফর্ম কে ত্যাজ্য করে নিত্য নতুন জামা পরে স্কুলে যাবো।  বিদ্রোহ হলো আমার মার সামনে আর পাখার (হাত-পাখার) বাড়িতে সে বিদ্রোহ ক্রন্দনের সুর করে দমন হলো।  তবে বিদ্রোহ-দমন রেখে গেলো একটা প্রশ্ন আর সেইটা হলো ইউনিফর্ম কত জরুরী ? 

সোমবার স্কুলে গেলাম আর নির্ধারিত করলাম কি রেবা আন্টির সাথে কথা বলবো।  কেননা আমার এই ক্রান্তিকারী বিচার শুনে স্কেল না মারার নির্ণয় খালি উনি নেবেন আর আমি পাখার বাড়ি আগেই খেয়ে নিয়েছি।  

রেবা আন্টি কে জিজ্ঞেস করলাম "আন্টি বোলো তো সবাই বলে কে ইউনিফর্ম হলো সাহেবি কায়দা তালে আর সাহেবি কায়দা খারাপ তাহলে আমরা ইউনিফর্ম কেন পরী?"

রেবা আন্টি হাসেন আর আমাকে বলেন " বাবা এতো বড় বড় কথা তুমি কি করে জানলে ?"

- " আমি আড়ি পেতে বাবা আর ওদের বন্ধুদের আড্ডা শুনেছিলাম "

- "তাই নাকি আর কি শুনেছ ? "

- " এই যে ইউনিফর্ম সাহেবি কায়দা, আগে নাকি ইউনিফর্ম ছিল না , আর কি সব পন্থী তন্থী ----"

- " বামপন্থী ?"

- " হ্যা হ্যা ওই    বামপন্থী"

- " ও আচ্ছা। তার পর।  "

- "অন্য দেশে নাকি এসব হয়ে না আমাদের দেশে এসব লাগানো এমন তেমন। "

-" শোনো কল্যাণ ইউনিফর্ম হলো একটা অনুশাসনের জিনিস "

- "অনুশাসন ? মানে "

- "আচ্ছা তালে এই ভাবে বলি।  আমাদের স্কুলে অনেক বাচ্চা পড়ে।  কারুর পরিবার ওদের পুজোর সময় খুব ভালো জামা কিনে দে আর কারুর পরিবার ওদের ওতো ভালো জামা কিনে দিতে পারে না।  এবার যদি ইউনিফর্ম না থাকে তালে কেউ খুব ভালো জামা পরে আসবে আর কেউ অটো ভালো জামা পরে আসবে না।  তার মানে সবাই সমান হবে না।  আর যারা ওই ভালো জামা পড়া বাচ্চাদের দেখবে তারা এই আবদার ওদের মা বাবা কে করবে।  আর মা বাবার সেই আবদার পুরো করতে পারবে না।  তাতে কি ভালো হবে ?"

- "না আন্টি তাতে তো খুব ভালো হবে না। ওরা কষ্ট পাবে। "

- "তাই তো।  সেই জন্য এই ইউনিফর্ম করা।  যাতে সবাই এক সমান দেখায়। UNI মানে হলো একরকম আর FORM মানে হলো দেখানো, সেই ক্ষেত্রে UNIFORM মানে সবাই কে এক মতন দেখানো।  আর সবাই যদি এক রকম দেখায় তালে সবাই কে এক রকম ভাবে দেখা হবে আর সবাই কে এক রকম ভালোবাসা বা মার দেওয়া হবে।  "

আমি বুঝতে পারলাম দুটো জিনিস।  

১. সমানভাবে ভালোবাসা আর মারের জন্য এই ইউনিফর্ম ই দায়ী।  

২. সাহেবরা সব কিছু খারাপ করে যায় নি।  

সেদিন থেকে আমার ইউনিফর্ম এর প্রতি টান আরও বেড়ে গেলো আর আমি খুব সংবেদনশীল হয়ে গেলাম এই ইউনিফর্ম নিয়ে।  

আজকে বুঝতে পারি রেবা আন্টি কত বড়ো কথা বলেছিলো।  আমরা আজকেও অনেক লোকেরা এই কথা বুঝতে পারে না।  আজকে এমন অনেক স্কুল আছে যারা ফ্যাশন ডিসাইনার দিয়ে ইউনিফর্ম বানায় আর গ্রাফিকাল ডিসাইনার দিয়ে বই ডিসাইন করে।  স্কুল , পাঠশালা, বিশ্ববিদ্যালয় আজ একটা বাণিজ্যিক রঙ্গভূমি আর এই রঙ্গভূমিতে স্নাতক আর অভিভাবকরা জোকার হয়ে ঘুরে বেড়াই।  আজকে রেবা আন্টির মতো শিক্ষকের অভাব তাই আমরা একটা ভীতু আর একটা non-informed প্রজন্মকে প্রশ্রয় দিচ্ছি।  

ইতি 

কল্যাণ